Title Title

হিন্দুস্তান টাইমস

হিন্দুস্তান পত্রিকা ১৯২৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মহাত্মা গান্ধীর সহযোগী কংগ্রেস নেতা সুভাষ মুখোপাধ্যায়। বর্তমানে হিন্দুস্তান টাইমস পরিচালিত হয় এইচটি মিডিয়া লিমিটেডের অধীনে, যা বীরলা পরিবার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। শোভনা ভারতিয়া এইচটি মিডিয়ার চেয়ারম্যান, যিনি বীরলা পরিবারের সদস্য। হিন্দুস্তান টাইমস বিভিন্ন সময়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে বাংলাদেশি অভিবাসীদের অবৈধভাবে বসবাস ও কাজ করা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই ধরনের সংবাদে বাংলাদেশের নাগরিকদের বিরুদ্ধে অতিরঞ্জিত অভিযোগ তুলেছে বলে সমালোচনা হয়। বাংলাদেশে অনেকেই মনে করেন যে, এসব প্রতিবেদন অভিবাসন সমস্যা নিয়ে ভুল ধারণা সৃষ্টি করে। পত্রিকাটি কিছু সময় বাংলাদেশকে সন্ত্রাসবাদের সাথে যুক্ত করে সংবাদ প্রকাশ করেছে, যেখানে বাংলাদেশি গোষ্ঠী বা ব্যক্তিদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমসের কিছু প্রতিবেদনে একতরফা এবং পক্ষপাতদুষ্ট তথ্য প্রকাশের অভিযোগ রয়েছে। বিশেষত, সরকারের কার্যক্রম ও বিরোধী দলের আন্দোলন নিয়ে অনেক সময় বিভ্রান্তিমূলক তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশে নির্বাচন সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলোতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল বলে তুলে ধরা হয়েছে, যা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমসের কিছু প্রতিবেদনে অতিরঞ্জন এবং অসম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সংঘটিত বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিস্থিতিকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এসব প্রতিবেদনে প্রেক্ষাপট ও বাস্তবতাকে উপেক্ষা করা হয়, যা দুই দেশের মধ্যে ধর্মীয় উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।
বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক উন্নয়নকে হিন্দুস্তান টাইমসের কিছু প্রতিবেদনে হেয়প্রতিপন্ন করার প্রচেষ্টা দেখা গেছে। বিশেষ করে, তৈরি পোশাক শিল্প, অবকাঠামো উন্নয়ন, এবং রপ্তানি প্রবৃদ্ধি নিয়ে তাদের প্রতিবেদনে নেতিবাচক ভাষা এবং তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে। এ ধরনের প্রচারণা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেমন ঘূর্ণিঝড় বা বন্যা নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমসের কিছু প্রতিবেদনে অতিরঞ্জিত তথ্য পরিবেশন করা হয়েছে। বাস্তব পরিস্থিতি ও বাংলাদেশের দুর্যোগ মোকাবিলা সক্ষমতাকে উপেক্ষা করে দেশকে দুর্বল এবং নির্ভরশীল রাষ্ট্র হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের সক্ষমতা সম্পর্কে ভুল ধারণা তৈরি করে।
সীমান্ত সমস্যা নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমসের কিছু প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে দোষারোপ করার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে, অনুপ্রবেশ, চোরাচালান, এবং অভিবাসন ইস্যুতে একতরফা দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করা হয়েছে। এ ধরনের প্রতিবেদন দুই দেশের জনগণের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি করে এবং কূটনৈতিক সম্পর্ককে জটিল করে তোলে। এছাড়াও পত্রিকাটি বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে এমন কিছু নেতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলে সমালোচকরা মনে করেন।

Title