Title Title

টাইমস অব ইন্ডিয়া

টাইমস অব ইন্ডিয়া পত্রিকাটি প্রতিষ্ঠিত হয় ৩ নভেম্বর ১৮৩৮ সালে মুম্বাইয়ে (তৎকালীন বোম্বে) জর্জ আর্দেস্টার এবং রবার্ট নাইটের নেতৃত্বে। পত্রিকাটির মালিকানা বর্তমানে বেনেট, কোলম্যান অ্যান্ড কোং লিমিটেড (বিসিসিএল) এর অধীনে, যা ভারতীয় শিল্পপতি শ্রীনিবাসন জৈন পরিবারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ভারতের সাথে বাংলাদেশি সরকারের সম্পর্কের ক্ষেত্রে কিছু নেতিবাচক বা অস্পষ্ট ব্যাখ্যা বা প্রতিবেদন অনলাইন ও প্রিন্ট মাধ্যমে প্রকাশ করেছে পত্রিকাটি। এতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এমন দাবি বাংলাদেশের কিছু মহল থেকে উঠেছে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সংঘাত ও হত্যা নিয়ে পত্রিকাটি প্রায়ই ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সংবাদ প্রকাশ করেছে, যেখানে বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি যথেষ্ট গুরুত্ব পায়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
রাজনৈতিক সংবাদের পক্ষপাতিত্বমূলক প্র্রতিবেদন তৈরি: টাইমস অব ইন্ডিয়া প্রায়ই বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে খবর প্রকাশে একতরফা বা পক্ষপাতদুষ্ট অবস্থান নিয়েছে। বিশেষ করে, বাংলাদেশের সরকার এবং বিরোধী দলের মধ্যকার দ্বন্দ্ব নিয়ে তাদের সংবাদগুলোতে অতিরঞ্জন দেখা যায়। যেমন, বাংলাদেশে সরকারবিরোধী আন্দোলন নিয়ে অতিরিক্ত গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে, যা দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল হিসেবে উপস্থাপন করেছে। এর ফলে দুই দেশের সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
ধর্মীয় বিষয় ও সংখ্যালঘুদের অবস্থা নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান: বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অবস্থা নিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়ার বেশ কিছু প্রতিবেদন ভিত্তিহীন বা অতিরঞ্জিত তথ্য পরিবেশন করেছে। এ ধরনের প্রতিবেদনে অনেক সময় বাংলাদেশের সামাজিক বাস্তবতাকে উপেক্ষা করে সংকটময় অবস্থা উপস্থাপন করা হয়, যা আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করে। এসব তথ্য দুই দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে উত্তেজনা ও ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করে।
অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে হেয় করার চেষ্টা: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, বিশেষত পোশাক শিল্প, রপ্তানি খাত, এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়ার কিছু প্রতিবেদনে নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ পায়। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশের শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ বা মজুরি সংক্রান্ত ইস্যুতে অতিরঞ্জিত প্রতিবেদন তৈরি করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতাকে ছোট করে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এ ধরনের সংবাদ আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভুল উপস্থাপন: প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেমন বন্যা বা ঘূর্ণিঝড়ের সময় টাইমস অব ইন্ডিয়া বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে অতিরঞ্জিত করে উপস্থাপন করেছে। এসব প্রতিবেদনে প্রায়ই বাংলাদেশের দুর্যোগ মোকাবিলার সক্ষমতাকে অগ্রাহ্য করা হয় এবং দেশকে দুর্বল রাষ্ট্র হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। এ ধরনের প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক সহায়তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ন্যায্য অবস্থানকে ক্ষুণ্ণ করতে পারে।
সীমান্ত ইস্যুতে প্রতিবেদন প্রচারমূলক প্রপাগান্ডা: সীমান্ত ইস্যুতে টাইমস অব ইন্ডিয়ার কিছু প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে দোষারোপ করার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে, অনুপ্রবেশ বা অবৈধ অভিবাসন নিয়ে তাদের সংবাদগুলোতে প্রায়শই অতিরঞ্জন ও পক্ষপাত লক্ষ্য করা যায়। এটি দুই দেশের জনগণের মধ্যে বিরূপ মনোভাব তৈরি করে এবং দীর্ঘমেয়াদে কূটনৈতিক সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার মতো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দায়িত্ব হলো সত্যনিষ্ঠ, নিরপেক্ষ এবং ভারসাম্যপূর্ণ সংবাদ পরিবেশন করা। বাংলাদেশ নিয়ে তাদের সুনির্দিষ্ট অপপ্রচার কেবল দুই দেশের সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করছে না, বরং বৃহত্তর আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্যও হুমকি সৃষ্টি করছে। দুই দেশের জনগণের মধ্যে সৌহার্দ্য বজায় রাখতে এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা বৃদ্ধি করতে তাদের আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন।
সংবাদমাধ্যমটি বয়কটের নিয়ম:
সব ধরণের প্রতিবেদন শেয়ার, কমেন্টস, লাইক বর্জন করুন
বাংলাদেশ সম্পর্কিত সংবাদ বিশ্বাসে সর্তক হোন
সংবাদ উৎস ব্যবহারে যাচাই করুন


Title