Title Title

তহেলকা

তহেলকা ভারতীয় একটি ম্যাগাজিন ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, তহেলকার প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান সম্পাদক ছিলেন তারুণ তেজপাল। তহেলকার সবচেয়ে আলোচিত এবং বিতর্কিত কাজগুলোর মধ্যে ছিল ২০০১ সালের ‘ওপেন সিক্রেটস’ স্টিং অপারেশন, যেখানে ভারতীয় প্রতিরক্ষা খাতের দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে রাজনীতি অঙ্গনের ব্যক্তিবর্গরা ধারণা করেছেন। ভারতীয় ম্যাগাজিন তহেলকা, যা তার অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা এবং বিতর্কিত প্রতিবেদনগুলোর জন্য পরিচিত, সম্প্রতি বাংলাদেশকে ঘিরে কিছু বিভ্রান্তিকর এবং অপপ্রচারমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক অগ্রগতি, এবং সামাজিক উন্নয়নকে বিতর্কিত এবং নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করার প্রবণতা স্পষ্ট হয়েছে।
তহেলকার প্রতিবেদনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ সম্পর্কে একতরফা মন্তব্য করা হয়েছে, যেখানে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং শাসন ব্যবস্থাকে দুর্বল এবং সংকটাপন্ন হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে উন্নয়নমূলক কার্যক্রম এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। এগুলোতে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তি না থাকলেও এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যেন এটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তহেলকার কিছু প্রতিবেদন বাংলাদেশের রপ্তানি খাত এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। তারা এমন দাবি করেছে যে, দেশের অর্থনীতি একটি 'হুমকির মুখে' এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো মূলত অস্বচ্ছ এবং অকার্যকর। অথচ বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশের অর্থনীতি গত এক দশকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধির উদাহরণ হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF), বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছে। 
তহেলকার প্রতিবেদনে সামাজিক ও ধর্মীয় ইস্যুগুলোকেও অতিরঞ্জিত করে তুলে ধরা হয়েছে, যা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং সামাজিক সম্প্রীতি নিয়ে অযথা উদ্বেগ সৃষ্টি করে। এসব প্রতিবেদনে তথ্যের উপস্থাপন ভ্রান্ত এবং পক্ষপাতদুষ্ট বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তহেলকার এই ধরনের অপপ্রচারমূলক প্রতিবেদনগুলো শুধু বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়কেই ক্ষতিগ্রস্ত করে না, বরং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কেও অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। এটি বাংলাদেশের প্রতি একটি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনার অংশ হতে পারে। বাংলাদেশের জনগণ এবং সরকারকে এই ধরনের প্রচার সম্পর্কে সতর্ক থাকা প্রয়োজন এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত তহেলকার মতো গণমাধ্যমের পক্ষপাতপূর্ণ এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সাংবাদিকতার বিষয়ে নজর দেয়া।
তহেলকার এই অপপ্রচারের ফলে সাংবাদিকতার নৈতিকতা এবং নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এটি একটি গণমাধ্যমের দায়িত্বকে ক্ষুণ্ণ করে এবং আঞ্চলিক শান্তি ও সহযোগিতার প্রচেষ্টায় বাধা সৃষ্টি করে। সুতরাং, এমন বিভ্রান্তিকর তথ্যের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সঠিক তথ্য যাচাই করাই হবে একমাত্র উপায়।


Title