খুচরা দোকানদার কোকাকোলা-পেপসি কিনতে বাধ্য করে!
মার্কেটিং পলিসি বিশ্লেষণ
আধুনিক বাংলাদেশিরা অপরকে অনুসরণ ও অনুকরণে বিশ্বাসী হয়ে উঠছে। ছোটছোট দোকানিরা বড়বড় সুপারশপগুলোকে অনুকরণ করে। সুপারশপগুলো যেসব পণ্য রাখে ছোটদোকানিরা তা বিক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করার চেষ্টা করে। এখানে এলিট-ক্লাস ভোক্তার আসা-যাওয়া করে বিধায় খুচরা দোকানিদের চেষ্টা থাকে একই ক্লাসকে আকৃষ্ট করতে এবং অন্তত মিডল-ক্লাসের নিকট তাদের পণ্য বিক্রি করতে। অধিকাংশ এলিট-ক্লাস ভোক্তারা বিদেশি বিজ্ঞাপন দেখে হয়তো কোকাকোলা বা পেসসি মতো ব্র্যান্ডের পণ্য কিনতে অনেকটা আগ্রহ দেখায়, পেসসির প্রচারণা যাইহোক যেহেতু বিদেশিরা এটা পান করে ‘এটা নিশ্চয় ভালো পানীয়’ এমন বিশ্বাস সাধারণত মনষ্কতাত্ত্বিক চিন্তাধারায় চলে আসে। আসলে আন্তর্জাতিক সকল পানীয় পণ্যের উপকরণ প্রয়োগের একটা আদর্শমান থাকে সেভাবেই পণ্য প্রস্তুত করা হয়, শুধু স্বাদ ও গন্ধের উপকরণটা ভিন্ন থাকে । বহুজাতিক কোম্পানির কোকাকোলা, পেপসি, আরসি পানীয় ব্র্যান্ডের মাত্রাতিক্ত বিজ্ঞাপন, চমকপ্রদ মোড়কজাতকরণ ও সহজলভ্যতা সাধারণ ভোক্তাদের আরো আকৃষ্ট করে তোলে। ভারতীয় সিনেমা-গানে এখনতো গানের নাম ‘কোকাকোলা’ দেওয়া হয়েছে। কোকস্টুডিও তো আছেই সারাবিশ্বে গানেগানে প্রচারণার দায়িত্ব নিলো, ‘কোক’ এখন মানুষের মগজে চলেগেছে। এবার কোকোকোলা-পেপসি যাইহোক, এটাই সেরা! না হলে কি বিদেশিরা এটা কেন বেশি পান করে! মিথ্যা বিজ্ঞাপনের সাথে লেমনের স্বাদযুক্ত, রমজানে ইফতারে কোকাকোলা তো আছেই। কিছু সাধারণ ভোক্তা বলে ”ফ্রেশকোলা, মজো-টজো এগুলো লোকাল ব্র্যান্ড, ধর্মীয় সিমপ্যাথি কাজে লাগিয়ে এখন ব্যবসা করছে”। খুচরা ব্যবসায়িরা বলে “ফিলিস্তিনের যুদ্ধের পর এরা কেইসে ফ্রি কমাইয়া দিছে, ফ্রিজও গিফট দেয় কম, কাস্টমারও কম ছাই! করার কিছু নাই তাই কোক বেছি। ফিলিস্তিনে মানুষ মাইরলে আমগো কি! পাবলিক তো পেপসি খাই”। এমন প্রশ্ন-গল্প হরহামেশা খুচরা বিক্রেতার কাছে শুনতে হয়।
আমাদের ’ভয়েস অফ বয়কট’ তিনজনের একটি টিম ঢাকার ধানমন্ডি’র ৮টি রেস্টুরেন্ট, জিগাতলার ৩টি খাবার হোটেল, গুলশানের ৪টি রোপটপ রেস্টুরেন্টে কোকাকোলা ও পেপসি ছাড়া কোন পানীয় রাখেন না বলে জানিয়েছেন। লালবাগের আশেপাশের আনুমানিক ৪০০ মিটারের যতগুলো হোটেল আছে তাদের কোন দোকানেই দেশিয় কোম্পানির কোন ব্র্যান্ডের পানীয় নেই। ঢাকার অধিকাংশ দোকানিরা পেপসি ও কোকাকোলা ছাড়া কোন সফটড্রিংস তেমনটা রাখেন না। কারণ জানতে চাইলে, খুচরা দোকানদারদের মতে, ভোক্তরা পানীয়গুলোকে উৎকৃষ্ট মনে করেন এবং ভোক্তার চাহিদা অনুযায়ী তারা পণ্য রাখেন এছড়াও লাভবেশি যোগান সহজলভ্য, বিক্রয়প্রতিনিধিরা চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করতে পারেন। অনেক ভোক্তাদের অভিযোগ করেছে ‘মজো’ মতো ব্র্যান্ডের পণ্য দোকানিরা রাখেন না, পরে হতাশ হয়ে কোকাকোলা-পেপসি কিনতে বাধ্য হই।
কোকাকোলা-পেপসি কেন কিনবেন না? বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানিগুলো দেশে বৈধ ব্যবসার মাধ্যমে বৈদেশিকমুদ্রা বিদেশে চলে যায়। স্থানীয় কোম্পানিগুলো বাজারে দখল করতে পারে না। এছাড়াও ইসলামধর্ম বিদ্বেষ ছাড়াতে ও ফিলিস্তিনে মুসলিম গণহত্যায় বহুজাতিক কোম্পানি কোকাকোলা, পেসসি ও আরসি পানীয় কোম্পানিগুলো সরাসরি জড়িত। শুধু ২০২৪ সালে ফিলিস্তিনে ১ লক্ষ্যের অধিক মুসলিমদের হত্যা করেছে, অফিশিয়াল রেকর্ড অনুযায়ী ৪৩০০০ ফিলিস্তানিদের হত্যা করেছে তন্মধ্(ভিডিও দেখুন)। কোকাকোলা-পেপসি পান করা মানেই মুসলিমদের রক্ত পান করার সমতুল্য।
অন্যান্য সূত্র থেকে পড়ুন:যে ১৭০০০ শুধু ০-৬ বছরের শিশু রয়েছে।
১। কোকাকোলার সেই বিজ্ঞাপন নিয়ে সমালোচনার ঝড়, কী আছে এতে?
২। প্রতিবার কোক পানে জীবনের ১২ মিনিট আয়ু কমে, দাবি বিজ্ঞানীদের
৩। কোকাকোলা’র গোপন ফর্মূলায় অ্যালকোহল
৪।গাজায় কোকা-কোলার ফ্যাক্টরি, মালিক কে