Title Title

বয়কট কোম্পানি

ম্যারিকো

ভারত

বয়কট ব্র্যান্ড

কোকো সোল বিউটি

ভারত

কোকো সোল বিউটি হলো ম্যারিকো কর্তৃক চালিত একটি স্কিন কেয়ার এবং হেয়ার কেয়ার ব্র্যান্ড, যা ২০২০ সালে বাজারে আসে। এই ব্র্যান্ডটি প্রধানত শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, বডি লোশন, হেয়ার অয়েল বাংলাদেশে ভারত থেকে আমদানি করা হয়। ম্যারিকো বাজারে তাদের পণ্যের অস্বাভাবিক উচ্চমূল্য নির্ধারণ এবং ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধির জন্য সমালোচিত হয়েছে। সাধারণ ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা এবং বাজারের প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ উপেক্ষা করে তারা পণ্যের মূল্য বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে, তাদের জনপ্রিয় পণ্য যেমন পারাশুট নারকেল তেলের দাম অনেক বেশি রাখা হয়, যা ভোক্তাদের ক্ষোভের মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় বাজারে প্রতিযোগিতা দমন করার অভিযোগও উঠেছে ম্যারিকোর বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানটি তাদের প্রভাবশালী অবস্থান ব্যবহার করে স্থানীয় ছোট ব্যবসায়ীদের ওপর চাপ প্রয়োগ এবং প্রতিযোগীদের ব্যবসা দমনের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করা হয়। এটি বাজারে স্বাভাবিক প্রতিযোগিতা ও উদ্ভাবনকে বাধাগ্রস্ত করে, যা সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। বাংলাদেশের স্থানীয় শ্রম বাজারে ম্যারিকোর ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি প্রদান এবং কর্মক্ষেত্রে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সব মিলিয়ে, ভোক্তাদের স্বার্থ বিরোধী কার্যকলাপ, বাজার নিয়ন্ত্রণের অপ্রতিযোগিতামূলক আচরণ এবং মানহীন পণ্য সরবরাহের অভিযোগের কারণে ম্যারিকো কোম্পানির ব্র্যান্ডগুলো বয়কটের দাবি জোরালো হয়েছে।
এছাড়াও বাংলাদেশে ভারতীয় পণ্য বয়কটের দাবি সময় সময় বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক কারণে ওঠে। দুই দেশের দীর্ঘ ইতিহাস, সাংস্কৃতিক সংযোগ এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও, কিছু ইস্যু দুই দেশের জনগণের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি করে এবং ভারতীয় পণ্য বর্জনের মত পদক্ষেপের দিকে বাংলাদেশি ভোক্তাদের ঠেলে দেয়। প্রথমত, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উত্তেজনা ভারতীয় পণ্য বয়কটের প্রধান কারণ হিসেবে কাজ করে। সীমান্তে হত্যা, অনুপ্রবেশ, এবং তিস্তা নদীর পানিবণ্টন ইস্যুতে ভারতের একতরফা অবস্থান বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দেয়। এসব ইস্যুতে ভারতের নীতির প্রতি অসন্তোষ প্রকাশের উপায় হিসেবে অনেক সময় সাধারণ মানুষ ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান জানায়।
দ্বিতীয়ত, ভারতের গণমাধ্যমে বাংলাদেশকে নিয়ে নেতিবাচক ও বিভ্রান্তিকর প্রচারণা জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বাড়িয়ে তোলে। ভারতীয় কিছু সংবাদমাধ্যমের পক্ষপাতদুষ্ট প্রতিবেদনের কারণে দুই দেশের সম্পর্কের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। এর ফলে, বাংলাদেশে ভারতীয় পণ্য বয়কটের দাবি আরও জোরালো হয়।
তৃতীয়ত, অর্থনৈতিক কারণে ভারতীয় পণ্য বর্জনের প্রবণতা তৈরি হয়েছে। ভারত থেকে আসা সস্তা এবং নিম্নমানের পণ্য অনেক সময় স্থানীয় শিল্প ও ব্যবসার জন্য হুমকি সৃষ্টি করে। বিশেষ করে, টেক্সটাইল, কৃষি পণ্য, এবং প্রসাধনী শিল্পে ভারতীয় পণ্যের দাপটে বাংলাদেশের স্থানীয় উৎপাদকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষিত রাখতে এবং দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে ভারতীয় পণ্য বয়কটের আহ্বান উঠতে দেখা যায়।
চতুর্থত, ভারতের কিছু রাজনৈতিক ও সামাজিক ইস্যু, বিশেষ করে মুসলিম বিরোধী নীতিমালা বা সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অভিযোগ, বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সহমর্মিতা ও ন্যায়বোধ থেকে ভারতীয় পণ্য বর্জনের মনোভাব তৈরি করে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশিরা তাদের অসন্তোষ এবং প্রতিবাদ প্রকাশ করতে চান।
পঞ্চমত, ভারতীয় পণ্যগুলোর মান এবং মূল্য নিয়ে কিছু ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে। অনেক ভোক্তা অভিযোগ করেছেন যে, ভারত থেকে আমদানি করা কিছু পণ্য নিম্নমানের হলেও তা উচ্চমূল্যে বিক্রি করা হয়। এই অবস্থায়, ভারতীয় পণ্য বর্জনের দাবিকে ভোক্তাস্বার্থ রক্ষার প্রয়াস হিসেবেও দেখা হয়।


Title